চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিবির নেতা আসাদুল্লাহ তুহিন হত্যার নয় বছর পর সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা ও র্যাব কর্মকর্তাসহ ১৮ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় আরও অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিহত আসাদুল্লাহ তুহিনের আপন মামা মো. কবিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
নিহত আসাদুল্লাহ তুহিনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরমোহনপুর এলাকার চকপাড়া গ্রামে। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নাববগঞ্জ সিটি কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস , জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. গোলাম রাব্বানী ফটিক , জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন , মো. এজাবুল হক বুলি , মো. মাইনুল ইসলাম , ডা. ইব্রাহিম আলী , মো. সোহেল , বেনজির আহমেদ , তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খাঁন আলমগীর, তৎকালীন র্যাব-৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর কামরুজ্জামান পাভেল, এসআই বিশারুল ইসলাম, এসআই শহিদুল ইসলাম, হাবিলদার খাইরুল ইসলাম, ল্যান্স কর্পোরাল ওমর ফারুক, নায়েক মো. সওদাগর আলী, মো. মাসুম বিল্লাহ, নুর মুহাম্মদ শিকদার, সিপাহী শফিকুল ইসলাম ও এসআই আবু হুরায়রা।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে নিজ বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় আসাদুল্লাহ তুহিনকে। এ সময় তিনি গাড়িতে উঠতে আপত্তি করলে রাইফেলের বাট দিয়ে তাকে বেধাড়ক পিটিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায় র্যাব সদস্যরা। রাত আনুমানিক ১০টা থেকে ১টার মধ্যে উল্লেখিত আসমিদের উপস্থিতিতে তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নতুন স্টেডিয়ামে অস্থায়ী র্যাব কাম্পে তুহিনকে বেধাড়ক মারপিট করা হয়। তার কাছে জামায়াত নেতাদের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামিদের প্রচণ্ড মারধরের ফলে আসাদুল্লাহ তুহিন গুরুত্বর জখম হয়ে মারা যান। এই মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তুহিনের মরদেহকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের লালাপাড়া এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং রাস্তায় ফেলে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ যেন উদঘাটিত না হয় সেজন্য তৎকালীন বি.এম.এ নেতা ডা. গোলাম রাব্বানী ফটিককে দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং সে চিকিৎসকদের প্রভাবিত করে মিথ্যা ও বানোয়াট সরতহাল ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট করানো হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রইস উদ্দিন বলেন, বাদির আবেদনটি যাচাই বাছাই শেষে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।