নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পরিশীলিত ও কার্যকর করতে নির্বাচন সংস্কার কমিশন সারাদেশের সকল অংশীজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে প্রস্তাব ও সুপারিশ করবে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন হওয়ার পর নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল আইন ও বিধি-বিধান আমরা পর্যালোচনা করেছি। এই পর্যালোচনায় আমরা অগ্রাধিকার চিহ্নিত করেছি এবং এই অগ্রধিকারগুলোর ক্ষেত্রেই আমরা আপনাদের মতামত চাইব।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের আয়োজনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, আপনারা অনেকেই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন অথবা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। আমরা জানতে চাই নির্বাচন ব্যবস্থায় কী কী ত্রুটি আছে, কী কী ঘটেছে অতীতে। আপনাদের অভিজ্ঞতার আলোকে খোলামেলাভাবে আমাদেরকে আপনাদের মতামত জানাবেন।
সভায় নির্বাচন কমিশনকে কীভাবে শক্তিশালী, কার্যকর ও স্বাধীন করা যায়, ভোটার তালিকায় নারী ভোটারদের সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে লিঙ্গ বৈষম্য নিরসন, প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্তি ও তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ, সংসদ ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচন সংস্কারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে একই ব্যক্তি যেন দুয়ের অধিক বার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে, অহেতুক নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে শব্দ দূষণ যাতে না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ, সারাদেশে চারটি বা বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচনী অঞ্চল ঘোষণা করে ধাপে ধাপে নির্বাচনের আয়োজন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করা, প্রবাসীদের অনলাইনে ভোট প্রদানের সুযোগ দেয়া, নির্বাচনের অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা, না ভোট প্রদানের বিধান পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আনা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থীকে নির্বাচিত না করে প্রয়োজনে পুনরায় ভোট গ্রহণ, পোলিং এজেন্টদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসা এবং ইভিএম এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ বাতিলসহ বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন টুলী, মীর নাদিয়া নিভিন, ড. মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস, সাদিক আরমান, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এবং জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।#এস.আর.