জান-ই-আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয় এর নবনির্মিত নিরাপদ পানির স্টেশন ও ওয়াশ ব্লক এর উদ্ভোধন

একেএম রুহুল  আমিন  ,স্বপন: আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ওয়াশ ফর আরবান পুওর, ডিএনসিসি ফেইজ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের অধীনে জান-ই-আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয় এ নবনির্মিত নিরাপদ পানির স্টেশন ও ওয়াশ ব্লক এর শুভ উদ্ভোধন এবং হস্তান্তর অনুষ্ঠান ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  মোঃ শামসুল আলম সরকার, সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান ,জান-ই-আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  লুৎফুন নাহার, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ক্যান্টনমেন্ট শিক্ষা থানা, জনাব বাবুল বালা, প্রোগ্রাম লিড, ইউনিভার্সেল এক্সেস, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, জনাব মোঃ মামুন চৌধূরী, কো-অর্ডিনেটর ওয়াটারএইড বাংলাদেশ,  এম.এ হাকিম পরিচালক (ওয়াশ), ডিএসকে, আরো উপস্থিত ছিলেন,জান ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক একেএম,রুহুল আমীন স্বপন ,এছাড়াও বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও স্কুলের ছাত্র/ছাত্রী অভিবাবক প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আঃ মান্নান মুন্সী। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব শ্যামল চন্দ্র দাস, প্রধান শিক্ষক, জান-ই-আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়।

হাফেজ মোঃ আল আমীনের কন্ঠে (দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ) পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্টান শুরু করা হয় । ফাতেমা আক্তার মহসীন ,ছাত্রী ১০ শ্রেনী।তার অনুভুতির কথা বলতে গিয়ে বলেন-প্রথমে তাদের বিদ্যালয়ে ওয়াশ স্থাপনা নির্মাণে ডিএসকে ও ওয়াটারএই্ড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। স্থাপনা নির্মাণের আগে ছেলে মেয়েদেরকে একই টয়লেট ব্যবহার করতে হতো এখন ছাাত্রদের জন্য আলাদা ও মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে এতে ছাত্র/ছাত্রীরা আলাদা টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা পাবে । আগে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ছিলনা বর্তমানে বিদ্যালয়ের প্রতিটি তলায় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করায় সকল ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই সুবিধা পাবে ।

মেয়েদের জন্য মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য ভেন্ডিন মেশিন এর ব্যবস্থা করায় সকল মেয়েরা অনেক সুবিধা পাবে । প্রতিবন্ধি ছাত্র আলিফ আবেদীন, তার অনুভুতির কথা বলতে গিয়ে বলেন সকল কাজ তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে নির্মাণ করায় সে ডিএসকে ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশ কে ধন্যবাদ জানান বিশেষ অতিথির বত্তৃতায় অখিল চন্দ্র দাস, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, ডিএসকে বলেন- বাজেট ও লোকবল থাকলে এই ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যায় কিন্তু এই ধরনের স্থাপনা টেকসইভাবে রক্ষাণাবেক্ষণ খুবই জরুরী । রক্ষণাবেক্ষন সঠিকভাবে করতে পারলে দীর্ঘদিন জান-ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা উন্নত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে। বিশেষ অতিথির বত্তৃতায় এম এ হাকিম -শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে যে সহায়ক পরিবেশ দরকার সেক্ষেত্রে শিক্ষার মান অনেক উন্নত হয় সেটার গুরুত্ব অনুধাবন করে ডিএসকে, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এ কাজগুলো বাস্তবায়ন করছে

বিশেষ অতিথির বত্তৃতায় বাবুল বালা-ওয়াটার এইড বাংলাদেশ ২৮টি দেশে মানুষের বেসিক রাইট্স নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে । এসডিজি ৬নং গোল কে অর্জন করার লক্ষ্যে ওয়াটারএইড কাজ করছে । একটি জরিপে দেখা গেছে বিদ্যালয়ে প্রায় ৩১% টয়লেট থালা বন্ধ থাকে, অনেক টয়লেট নোংরা কিংবা ব্যবহারের অনুপযোগী থাকে । এর ফলশ্রতিতে ২০১৫ সালে সরকার একটি পরিপত্র জারি করেন । স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট , গাল্র্স গাইডকে যুক্ত করে ওয়াশ অবকাঠামো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা আছে । মল ও পানিবাহিত রোগ নিরাময়ে উন্নত ওয়াশ অবকাঠামো গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে । থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার- টিম ওর্য়াক এর মাধ্যমে কাজ করলে সেকোন কঠিন কাজও সহজে করা যায় । জান-ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে ওয়াশ স্থাপনা নির্মাণ করায় ডিএসকে ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান ।

প্রধান অতিথি – জান-ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে ওয়াশ স্থাপনা নির্মাণ করায় ডিএসকে ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান ।সভাপতি- শ্যামল চন্দ্র দাস- জান-ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে ওয়াশ স্থাপনা নির্মাণ করায় ডিএসকে ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান । সকল কাজ তাদের মতামতের গ্ররুত্ব দিয়ে নির্মাণ করার জন্য তারা অত্যন্ত খুশী হয়েছে । ডিএসকে সাথে আজীবন এই ধরনের সুস্পর্ক বিদ্যমান থাকবে । ভবিষতে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের প্রয়োজনে ডিএসকে ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশকে পাশে যাতে পায় সেই বিষয়ে প্রস্তাব রাখেন । স্কুলের ওয়াশ ব্লকগুলি নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আরেক জন নতুন লোক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন আছে । স্কুলের ওয়াশ স্থাপনা সর্বাবস্থায় যাতে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যায় এই ব্যাপারে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি সব সময় সহযোগিতা করে থাকেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ছাত্র /ছাত্রীরা এবার এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছে ,আগামীতে আরো ভালো রেজাল্টের প্রত্যাশা করি। গতকাল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণায় দেখা যায় প্রতিযোগিতা চলছে লেখাপড়ায়। আবার নুতন ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।আশাবাদী আগামীকাল থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফন্নাহার আপার সহযোগিতায় বাচ্চাদের হাতে নুতন বই পৌঁছে দিতে পারবো। ওয়াশ ফর আরবান পুওর, ডিএনসিসি ফেইজ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৩ টি বস্তি, ৩ টি স্কুল ৯ টি পাবলিক টয়লেট এ দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে উন্নতমানের পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতকরনে ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন, হাইজিন ) কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে । উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুলসহ ৩৫০০০ বস্তিবাসী মানুষকে নিরাপদ পানির সুবিধা প্রদান করবে, ৪০০০০ বস্তিবাসী মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুবিধা প্রদান করবে এবং ৫০০০০ বস্তিবাসী মানুষকে স্বাস্থ্যাভাসের বার্তা প্রদান করবে।

 

এরই ধারাবহিকতায় জান-ই-আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয় এ ৪ টি নিরাপদ পানির স্টেশন ও ওয়াশ ব্লক (মোট ১৭ টি টয়লেট চেম্বার, প্রতিবন্ধি ছাত্রদের জন্য ২টি টয়লেট চেম্বার এবং ২ টি গোসলখানা সহ), একটি ওজু খানা, ৩টি হাত ধোয়ার স্টেশন, ছাত্রীদের চেম্বারে স্যানিটারি ন্যাপকিন এর জন্য ভেনডিং মেশিন নির্মান করা হয়েছে । উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তাগণ উঝক কতৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের গুনগত মানের প্রশংসা করেন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আরো বেশী বেশী স্কুলে নিরাপদ পানি ও পয়:নিস্কাশন উন্নয়নে এই ধরনের প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগিদের এগিয়ে আসার জোড় আহবান জানান । পাশাপাশি জান ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিবর্তন চোখে পরার মত।ওয়াসরুম থেকে শুরু করে স্কুলের প্রতিটি ফ্লোরে ২ টা করে ওয়াসরুম স্যানিটেশন ব্যবস্থা চোখে পরার মত। স্কুল ক্যাম্পাসের ২ টা গেটের সামনেই স্হাপন করা হয়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com