অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের জোয়ারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

 মো. মাসুদ আলম : আমরা সঠিকভাবে ভেদাভেদ ভুলে এক দেশ ও এক জাতি হয়ে আমাদের ছাত্র সমাজের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাই মিলেমিশে বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবেলা করব। আমাদের ঘুনেধরা সমাজকে নাড়া দিয়ে আমাদের সোনার ছেলেরা বুঝিয়ে দিল দায়িত্ব নিয়ে যদি আইন মেনে চলা যায় তাহলে দেশের উন্নতি অবশ্যই করা সম্ভব। আমরা সন্ত্রাস, হানাহানি ও বিভেদ ভুলে যাব। আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী বুঝিয়ে দিল ইচ্ছা, মানবিকতা, মনোবল থাকলে যেকোন বিষয়েই পরিবর্তন করা সম্ভব। অল্প বয়সের তরুণ ছেলে-মেয়েরা জাতিকে উন্নতির স্বর্ণশিখরে নিয়ে যাবেই বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কিন্তু তারজন্য আমাদের ও সাহায্য সহোযোগিতারও বিশেষ প্রয়োজন। জাতির এই দুঃসময়ে সেনাবাহিনী যেভাবে এগিয়ে এসেছে এবং তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে তা আসলেই নজিরবিহিন। ভবিষ্যতে তারা যদি এভাবে সার্বিক সহযোগিতা করে।

তাহলেই এ জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এ যেন নতুন এক বাংলাদেশ। চারিদিকে তারুণ্যের জোয়ার। নিজেদের দেশকে ঢেলে সাজাতে কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের কাজ, যেমন যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করা, গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় তদারকি, গণপরিবহনে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে পুরুষ যাত্রীদের বসতে বাধা প্রদান করাসহ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। পথঘাটের ময়লা-আবর্জনা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন। সেই সাথে নতুন বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান, তা-ও ফুটিয়ে তুলছেন গ্রাফিতি আর দেয়ালিকায়।

কিছুদিন আগেই বিভিন্ন স্থানের দেয়ালে গ্রাফিতি আর দেয়ালিকার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলো শিক্ষার্থীরা। আর এখন সেগুলো আবার তুলেও ফেলছেন তারা। দিচ্ছেন নতুন রূপ, আঁকছেন নতুন কোনো স্বপ্ন। যেমন বাংলাদেশ তারা চান সেটিই ফুটিয়ে তুলছেন রঙের তুলিতে। গ্রাফিতিতে তারা তুলে ধরছেন নতুন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। রূপান্তরের বাংলাদেশ করতে গিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানের অপরিচ্ছন্ন রাস্তা-স্থাপনা পরিষ্কারের কাজ ইতোমধ্যেই প্রায় শেষ করে এনেছেন শিক্ষার্থীরা। আর এসব কাজে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ সবাই। তাদের কণ্ঠের দৃপ্ত উচ্চারণ, যা আমলে না নেয়ার সুযোগ নেই কারোই। শুধু রাস্তাঘাট আর স্থাপনা নয়, শিক্ষার্থীরা চায় ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন হোক পুরো রাষ্ট্র। সকল অনিয়ম, দুর্নীতি, অন্যায্যতা দূর হোক স্বাধীন বাংলাদেশে। শিক্ষার্থীদের এই চাওয়া হোক আমাদের প্রত্যেকের অন্তরের অন্তঃস্থলের চাওয়া।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে, নতুন করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে; ছাত্রসমাজ তথা সাধারণ জনগণের এটাই প্রত্যাশা। আজকেই সবাই জানতে পারবো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আরও কারা থাকছেন। আশা করি, সবকিছু ভালো ও সুন্দরমতোই হবে। এগিয়ে যাবে স্বাধীন বাংলাদেশ। বিশ্ববাসী দেখবে সুশৃঙ্খল জাতি সুশৃঙ্খলভাবেই এগিয়ে চলছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আশা করি, এই সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অনক দূর এগিয়ে যাবে। গড়বে সোনার বাংলা। বিশ্বের বুকে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার পথ প্রশস্ত করে দেবে। অর্থনীতির চাকা সচল করবে। দেশের মানুষের গলার কাঁটা হয়ে ওঠা সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দেশকে সুশৃঙ্খল জাতি হিসেবে গড়ে তুলবে। দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে এসে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করবে এই সরকার। মানুষ শান্তিতে থাকবে। দেশবাসী তথা পুরো বিশ্ববাসী আশা নিয়ে অপেক্ষার অধীর চোখে তাকিয়ে আছে এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com