নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী সিভিল সার্জন এর সম্মেলন কক্ষে আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইউনিসেফের সহযোগিতায় জেলা তথ্য অফিস ‘শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এক্টিভিটিজ অন ভায়োলেন্স এগেইন্সড চিলড্রেন (ভিএসি) এন্ড আর্লি চাইল্ড ম্যারেজ (ইসিএম) বিষয়ক প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা: তামান্না কবীর।
অন্ষ্ঠুানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) এর উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো: তৌহিদুজ্জামান।
জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক মোহা. ফরহাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক মো: হাসান আখতার, বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন রাজশাহীর পরিচালক মো: আনিসুজ্জামান শিকদার, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এফ এ এম ডা: আঞ্জুমান আরা বেগম।
জেলা তথ্য অফিসের উপপরিচালক নাফেয়ালা নাসরীন সভায় সঞ্চালনা করেন।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হচ্ছে।
এখানে পাকিস্তানে ও আফগানিস্তানের চেয়েও বাল্য বিবাহের হার বেশি। আবার দেশের মধ্যে রাজশাহী বিভাগে বাল্যবিবাহের হার সর্বোচ্চ।
বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তাগণ বলেন, শিশু নির্যাতনের মূল কারণ হচ্ছে বাল্যবিবাহ।
প্রতিটি ঘরে ঘরে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শহরের তুলনায় গ্রামে বাল্যবিবাহের হার বেশি।
অন্যদিকে উচ্চ শিক্ষার কারণে শহর এলাকায় বাল্যবিবাহের হার কম হলেও উচ্চ শিক্ষিত নারীদের সুযোগ্য পাত্র পাওয়াও বেশ মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
সমাজে বিদ্যমান ধর্মীয় কুসংস্কার, দারিদ্র্যতা, নারীর প্রতিসহিংসতা, জন্ম-নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বয়স বাড়িয়ে দেখানোর প্রবণতা এবং নিরাপত্তাহীনতায় বাল্যবিবাহের অন্যতম কারণ উল্লেখ করে বক্তাগণ বলেন, অনেক পিতা-মাতা অজ্ঞতা, সামাজিক কুসংস্কার এবং দারিদ্র্যতার কবলে পড়ে ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দেয়।
বাল্যবিবাহ অপ্রাপ্ত বয়স্ক বর-কনের প্রত্যেকের জন্য বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে। গর্ভধারণে জটিলতা, অপুষ্টি, প্রসবকালীন মা ও শিশু মৃত্যুঝুঁকি, প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য জটিলতায় তাদের ভুগতে হয়।
এ সময় বক্তারা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সমাজের সকলক্ষেত্রে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন কমানো গেলে বাল্যবিবাহ অনেকটাই কমে আসবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের দপ্তর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।