জুলাই বিপ্লবের’ ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততা নেই: প্রেস সচিব

নিজস্ব  প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৩১ ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের যে ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হবে, তার সঙ্গে অন্তর্র্বতী সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ। আমরা এটিকে প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ হিসেবেই দেখছি। সরকারের সঙ্গে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যারা এটিকে সাপোর্ট করছেন, এটা প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভকে সাপোর্ট করছেন।’সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ নিয়ে আরো বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত ঘোষণা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদেরও স্পষ্ট কিছু বলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।সচিবালয় ইস্যুতে আজাদ মজুমদার বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে সচিবালয় একটা ক্রাইম সিন। সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আগুনের ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্ত চালানোর জন্য আমরা সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা মনে করি সাংবাদিকরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। সহযোগিতার অংশ হিসেবে একটা সাময়িক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে কিন্তু জানিয়েছি, এই সিদ্ধান্ত সাময়িক। একেবারেই তদন্তের প্রয়োজনে। ক্রাইমের যে লক্ষণগুলো সন্দেহ করা হচ্ছে সেগুলোকে প্রটেক্ট করার জন্য, বেশি মানুষ প্রবেশ করলে আলামত নষ্ট হতে পারে, এজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের স্বার্থে এই তদন্ত সুষ্ঠু হওয়া জরুরি। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত।’’

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন।রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩১ ডিসেম্বর বেলা তিনটায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই ঘোষণা সামনে রেখে রবিবার দুপুরে বাংলামোটরে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এ বিষয়ে কথা বলেছেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘আমরা চাই, মুজিববাদী সংবিধানকে কবরস্থ ঘোষণা করা হবে। যেখান থেকে এক দফার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ঠিক সেই জায়গা থেকে মুজিববাদী বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচিত হবে। আমরা প্রত্যাশা রাখছি, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে নাৎসিবাদী আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রটি ৫ আগস্টেই হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘‘এটি না হওয়ার কারণে গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী পাড়াসহ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তিগুলো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। দুই হাজারের বেশি শহীদ ও ২০ হাজারের বেশি আহতের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এর বৈধতা নিয়ে (লেজিটিমেসি) প্রশ্ন তুলছে।’’

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা বিপ্লবের একটিমাত্র ধাপ অতিক্রম করেছি। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরো আগে ঘোষণা করা প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এই বিপ্লব যেমন ফ্যাসিস্টবিরোধী সবাইকে ধারণ করতে পেরেছিল, এই ঘোষণাপত্রও সবার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে পারবে। এর মধ্যে ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া করা হয়েছে বলে জানান সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘‘এই বিপ্লবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-মত, ধর্ম ও বয়সের যে মানুষেরা সরাসরি অংশ নিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এটি সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com