সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনসহ সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

image_pdfimage_print

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশের ন্যায় নওগাঁয় তুলসীগঙ্গা নদীর প্রাণ ফেরাতে পরিষ্কার অভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া দেড় কিলোমিটার তুলসীগঙ্গা নদী পরিষ্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল। এতে হাতল, দা ও কাস্তে হাতে নিয়ে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছাড়াও অংশ নেয় শহরের ৭-৮টি সংগঠনের আড়াই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় যুব দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সেখানে আলোচনা সভা হয়। সভায় অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাবেদ ইকবাল ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফইজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, এবছর জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দেশের ৬৪টি জেলার ৬৪টি খাল, নদী ও জলাশয় পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় তুলসীগঙ্গা নদীর দেড় কিলোমিটার এলাকার কচুরিপানা ও আর্বজনা একদিনে পরিষ্কার করবে বিডি ক্লিন, ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটসহ ৭-৮টি সংগঠনের আড়াই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী ও পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। ৬টি দলে বিভক্ত হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ পরিস্কার কার্যক্রম চালানো হবে।

সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামা স্বেচ্ছাসেবীরা সরিষার তেল ও কেরোসিন হাত-পায়ে মেখে নদীতে নামেন। দীর্ঘক্ষণ নদীতে নেমে ক্লান্ত হওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য খাবার পানি ও স্যালাইনের ব্যবস্থ্যা করা হয়। কেউ অসুস্থ্য হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসায় মাঠে দেখা গেছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে আসা মেডিকেল টিম এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। এসময় একে অন্যের হাতে হাত রেখে গানের তালে তালে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবীরা।

পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবী গুলনেহার গন্ধা পায়েল বলেন, নদী পরিষ্কার কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। শুরুতে এসব কার্যক্রমে বাসা থেকে বাঁধা দিলেও বিডি ক্লিনে কাজ করার পর যখন বাহবাও পাচ্ছিলাম, তখন থেকে পরিবার থেকেও সাপোর্ট পাচ্ছি। নদীতে নেমে কাজ করার সময় প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়রাও আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করছেন।

বিডি ক্লিনের টিম মনিটর সাঈদ জোবায়েদ অনিক বলেন, গত দেড় দশকে তুলসীগঙ্গা নদী পুনঃখননের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। নদীর প্রাণ ফেরাতে টেকসই কোনো পরিকল্পনা ছিল না সরকারের। এর ফলে পুরো নদীই এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই নদী আবারো প্রাণ ফিরে পাক। পুরো নদী পরিষ্কার করতে পারলে পানিতে থাকা জলজ প্রাণিদের বসবাস করা অনেকটা সহজ হবে। নদী তার স্বাভাবিক গতিপথ আবারো ফিরে পাবে।

বিডি ক্লিন নওগাঁ জেলার সমন্বয়ক মো. রায়হান বলেন, ২০১৯ সালে নওগাঁয় যাত্রা শুরুর পর থেকে বিডি ক্লিন ড্রেন, খালসহ বিভিন্ন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছে। তুলসীগঙ্গাকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই কার্যক্রমে আমাদের এক শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী নদীতে নেমে কাজ করছে। জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিচ্ছন্নতায় ব্যবহৃত সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করলে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই পুরো তুলসীগঙ্গা নদীর ৬-৭ কিলোমিটার এলাকার কচুরি পানা ও আবর্জনা পরিষ্কার করবে বিডি ক্লিন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *