সীমান্ত পরিস্থিতি এখন মোটামুটি স্বাভাবিক- স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা

নিজস্ব  প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি এখন মোটামুটি স্বাভাবিক। সেখানে কোনো উত্তেজনা নেই। ভারতীয় পক্ষ এখন আর কোনো কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে না। সীমান্তে এখন স্থিতাবস্থা বিরাজ করছে। আগামী মাসে মহাপরিচালক পর্যায়ে বিজিবি ও বিএসএফ এর বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি তুলে ধরা হবে। তাছাড়া সীমান্ত নিয়ে দু’দেশের মধ্যে যে অসম চুক্তিগুলো রয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্টদের বরাবর চিঠিও দেয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে সশস্ত্র বাহিনী-সহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার ময়মনসিংহ বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার ময়মনসিংহ অঞ্চলের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।সারের সংকট বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দেশে সারের কোনো সংকট নেই। কেউ যদি সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।তিনি বলেন, যেসব ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবে, তাদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে। তাদেরকে কোন অবস্থায় ছাড় দেয়া হবে না।

তিনি আরো বলেন, কৃষকরাই আমাদের অর্থনীতির প্রাণ। তারা যেন ন্যায্য মূল্যে ও সঠিক সময়ে সার ও বীজ পায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।এর আগে মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কেপিআই স্থাপনাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ও অন্যান্য দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সেখানে নিয়মিত মহড়া দিতে হবে।তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় ডেকোরেশন বন্ধ করতে হবে। কেননা, ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কারণে অনেক সময় অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়।লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, অতীতের বদনাম ঘুচিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে তাদের কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। উপদেষ্টা বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে ফ্যাসিস্টদের কোন অবস্থায় ছাড় দেয়া যাবে না। উপদেষ্টা এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা বলেন, যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করার ফলে কৃষি জমির পরিমাণ দিনদিন কমছে। সেজন্য সরকার ‘কৃষি জমি সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ একান্ত জরুরি। আমাদের দেশে সবজি সংরক্ষণে কোনো সংরক্ষণাগার নেই। তাই ফুলকপি, শালগম, গাজর-সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি সংরক্ষণে ছোট ছোট স্টোর বা সংরক্ষণাগার করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে। উপদেষ্টা বলেন, জনগণের জন্য উপকারী উদ্ভাবনী উদ্যোগসমূহকে সরকার সবসময় স্বাগত জানায়। সেগুলো বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে অর্থের অভাব হবে না বলেও উপদেষ্টা এসময় মন্তব্য করেন।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় সশস্ত্র বাহিনী-সহ ময়মনসিংহ রেঞ্জের আওতাধীন সকল পুলিশ ইউনিট, র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার ময়মনসিংহ অঞ্চলের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ড. মোঃ আশরাফুুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের আঞ্চলিক পরিচালক ড. সালমা লাইজু, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম প্রমুখ।পরে উপদেষ্টা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) পরিদর্শন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com