অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পেলেন বাবর

নিজস্ব  প্রতিবেদক: বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়ের করা মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।বুধবার (১৯ মার্চ) লুৎফুজ্জামান বাবরের আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাবরের আইনজীবী।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। সেই থেকে প্রায় ১৭ বছর কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির এই নেতা।এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। সেই সব মামলা থেকে খালাস ও জামিনের পর ১৬ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি।এর আগে, ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন স্পেশাল ট্রাইবুনাল-৯ লুৎফুজ্জামান বাবরের নিজ বাসায় লাইসেন্সবিহীন রিভলবার পাওয়ার অভিযোগে ১৭ বছরের সাজার রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণীতে দেখা যায়, ২০০৭ সালের ২৭ মে দুপুরে যৌথবাহিনী লুৎফুজ্জামান বাবরের বাসা থেকে তাকে আটক করে। পরদিন ২৮মে গুলশান থানার জি.ডি নং. ১৯৭৩ মূলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারের ৭ দিন পর অর্থাৎ ৩ জুন উনার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অস্ত্র আইন, ১৯৭৪ এর ১৯ক এবং ১৯(চ) ধারায় মামলা করা হয়। মামলাটি করেন গুলশান থানার এস আই হেলাল উদ্দিন।

এজাহার বিবরণীতে বলা হয় গ্রেফতারের দিন দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে যৌথবাহিনী ও গুলশান থানা পুলিশ তার বাসায় তল্লাশি চালান।অভিযানে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র (রিভলভার, পিস্তল, রাইফেল ও শর্টগান) জব্দ করা হয়। এসব অস্ত্রের লাইসেন্সের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে লুৎফুজ্জামান বাবর সাহেবের স্ত্রী ৩ টি অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদর্শন করেন। উদ্ধারকৃত রিভলবার এর লাইসেন্স প্রদর্শন করতে পারেননি। এর ২০ দিন পর ২৩ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। রাস্ট্রপক্ষ আনীত অভিযোগ প্রমাণে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদান করেন।একই বছরের ৩০ অক্টোবর মেট্রোপলিটন স্পেশাল ট্রাইবুনাল নং-৯, ঢাকা তাকে অস্ত্র আইন, ১৯৭৪ এর ১৯ক ধারায় ১০ বছর এবং ১৯(চ) ধারায় ৭ বছর সর্বমোট ১৭ বছরের সাজা প্রদান করে।ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন বাবর।

আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আর্গুমেন্ট:

১। যৌথবাহিনী তাকেকে গ্রেফতারের ৭ দিন পর উদ্দেশ্যমূলভাবে এই মামলা দায়ের করা হয়।
২। এজাহারে বলা হয়, একটি লাল-কালো ব্যাগ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয় কিন্তু শব্দ তালিকায় সেই ব্যাগ ছিল না।
৩। যেই জিডিমূলে তাকে গ্রেফতার করা হয় আদালতের দরখাস্ত দেওয়া সত্ত্বেও সেই জিডি বিচিরিক আদালতে প্রদর্শন করা হয়নি।
৪। আসামি পক্ষ থেকে ঘটনার দিনে ঐ বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপনের জন্য বারবার আবেদন করা হলেও তা মঞ্জুর করা হয়নি। মূলত যৌথবাহিনীর কয়েকজন সদস্য উল্লিখিত লাল কালো ব্যাগ হাতে নিয়েই বাসায় প্রবেশ করে।৫। মামলায় দুজন নিরপেক্ষ সাক্ষী রয়েছে। দারোয়ান ও ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি। তারা সাক্ষ্যপ্রদানকালে বলেন, তাদের সামনে জব্দ করা হয়নি শুধু স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com